আরব ও ইসলামিক সম্মেলনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা
- By Jamini Roy --
- 12 November, 2024
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্প্রতি গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের কঠোর সমালোচনা করেছেন। আরব ও ইসলামিক বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে রিয়াদে আয়োজিত জরুরি সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি ইসরায়েলের ‘সামরিক আগ্রাসন’ ও ‘হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই আগ্রাসন ফিলিস্তিন ও লেবাননের সাধারণ মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুবরাজ সালমানের বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়, নতুন করে আক্রমণ বন্ধ না করলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হবে। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনের প্রতি সৌদি আরবের সমর্থন অবিচল এবং ইসরায়েলের উচিত ফিলিস্তিনিদের অধিকার স্বীকার করে আলাদা রাষ্ট্র গঠনে সহযোগিতা করা।
সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য নেতারাও এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেন। আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গাইত গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির দাবি করেন। তিনি বলেন, "ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা এমনভাবে বেড়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। বিশ্ব এ অবস্থার মুখোমুখি হতে পারে না।”
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, “হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে অভিযান চালাচ্ছে, তা লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে।” তিনি ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের ফলে সৃষ্ট সংকটের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত এই আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানান।
ইরানের প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং হামাস ও হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেন। আরব ও ইসলামিক নেতারা সম্মিলিতভাবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপগুলোকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেন এবং ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘে ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিতের দাবি জানান। তিনি বলেন, “ইসরায়েলের বর্তমান নীতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে প্রধান বাধা। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের ওপর চালানো আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবুও এই মানবিক সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন চান।
এই সম্মেলনে আরব ও ইসলামিক বিশ্বের নেতারা ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম বন্ধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানান। সম্মেলনের এক প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের অধিকার রক্ষার ওপর জোর দিয়ে বলা হয়, "ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।"
সম্মেলনটি আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে, যেখানে গাজা ও লেবাননের নিরীহ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।